শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৩০ অপরাহ্ন
এমএম ইলিয়াছ আলী, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ সংবাদদাতা: সুনামগঞ্জের অন্যতম শস্য-ভাণ্ডার দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার কাঁচিরভাঙ্গা হাওর, ডেকার হাওড়, সাংহাইর হাওর, জামখোলা হাওর, খাইর হাওরের কৃষকদের ২২ হাজার ২শত ৭৫ হেক্টর জমির ফসল রক্ষায় নির্মিত বাঁধ এবং ক্লোজারের কাজ শুরু হলেও নির্মাণ কাজ এখনও শেষ হয়নি। সরেজমিন কাঁচিরভাঙ্গা হাওর, ডেকার হাওড়, সাংহাইর হাওর, জামখোলা হাওর, খাইর হাওরের বিভিন্ন উপ-প্রকল্পের বাঁধ পরিদর্শনকালে দেখা যায়, অধিকাংশ বাঁধই ঝুঁকিপূর্ণ এবং বাঁধের কাজ চলছে ধীর গতিতে। বাঁধের অগ্রগতি নেই বললেই চলে। তবে কৃষকদের মতে এখন পর্যন্ত কাজ হয়েছে ৩০-৪০ ভাগ।
এদিকে মঙ্গলবার সরেজমিন দরগাপাশা ইউনিয়নের খাইর হাওর উপ-প্রকল্পের আক্তাপাড়া ব্রিজের পূর্বপাশ, সিচনী ব্রিজ ভাঙ্গা বন্ধকরণ প্রকল্পের অধীনে এলোংগীর হাওরের উত্তরপাড়ে স্থানীয় পিআইসি দরগাপাশা ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য ফরিদুর রহমান সিচনী ব্রিজ ভাঙ্গা বন্ধকরণ অংশে মাটিকাটার খরচ বাঁচাতে নির্মাণাধীন বাঁধের খুব কাছ থেকে মাটি উত্তোলণ করে নির্মাণ করছেন বেরি বাঁধ। খবর পেয়ে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আলমগীর কবির সরেজমিন ঘটনাস্থলে গিয়ে নির্মাণাধীন বাঁধ পরিদর্শন করেন এবং তাৎক্ষণিক বাঁধের কাজ বন্ধ রাখার নিদের্শন প্রদান করেন।
অপরদিকে পূর্বপাগলা ইউনিয়নের ডেকার হাওর অংশে পিআইসি ইউপি সদস্য রুপন মিয়ার নির্মাণাধীন পুইট্টা বাঁধ পরিদর্শন কালে দেখা যায়, নির্মাণাধীন বেরি বাঁধের মূল মাটি হতে নতুন বাঁধটি প্রায় সাড়ে ৩ ফুট নিচে এবং অনেকাংশে বাঁধের ড্রেসিংসহ বাঁধের উচ্চতা, ঢালু, চওড়া, প্রস্থ সিংহভাগ কাজই ত্র“টিপুর্ণ। অথচ নীতিমালা অনুযায়ী সাধারণ বাঁধের ১২ ফুট, ক্লোজারের ক্ষেত্রে ৩০ ফুট দূরত্বে মাটি উত্তোলনের কথা রয়েছে। চলতি বছর ও সঠিকভাবে বাঁধ নির্মাণ না করা হলে আগাম বন্যার পানিতে তলিয়ে যেতে পারে এখানকার ফসল এমনই আশংকা করছেন এখানকার কৃষকগণ। এসব এলাকার নদীর নাব্যতা ব্যাপকভাবে হ্রাস পাওয়ায় নদীর পানি প্রবাহ ও ধারণ ক্ষমতা হারিয়ে মরা নদীতে পরিণত হয়েছে। ফলে সামান্য বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে নদীর তীর উপচে পানি হাওরে প্রবেশ করে।
স্থানীয় কৃষক ও জনপ্রতিনিধিরা বলেছেন, কোথাও কোথাও বাঁধ ও ক্লোজারের কাজ ৪০ ভাগেরও কম হয়েছে। স্থানীয় একাধিক কৃষকের সাথে আলাপকালে জানা যায়, চলতি বছরে অন্য বছরের চেয়ে বাঁধ অনেক নিচু হয়েছে, দুর্বল হয়েছে। পাহাড়ি ঢল এলে নদীতে যে পরিমাণ পানি হয় এ বাঁধে তা রক্ষা হবেনা।
দক্ষিণ সুনামগঞ্জের খাইর হাওরের দায়িত্বে থাকা পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসও মোসাদ্দেক হোসেন জানান, খাইর হাওরে প্রায় ৪৫% ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। অবশিষ্ট কাজ শীঘ্রই সম্পন্ন হবে।
দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আলমগীর কবির জানান, বাঁধের পাশ থেকে মাটি উত্তোলন করায় কাজ বন্ধ করে দিয়েছি। পাশাপাশি প্রতিদিন উপজেলার অন্যান্য বাঁধ পরিদর্শন করছি। শীঘ্রই সবগুলি বাঁধের কাজ সম্পন্ন করার জন্য পিআইসি কমিটি ও সংশ্লিষ্টদের তাগিদ দিয়েছি ।